টেবিলের ওপর তিন দিন থেকে পড়ে থাকা ওই আধখাওয়া চায়ের পেয়ালা এবং আমার জীবনের মধ্যে
মধ্যে বিশেষ অমিল খুঁজে পাচ্ছি না
তুলনাটা দেয়া যেত আমার বাসার পিছনের ওই দেবদারু বৃক্ষের সাথে
সেও তো ঠায় দাঁড়িয়ে পেয়ালার মতোই অথবা আমার মতোই,
কিন্তু দেবদারুর ডালে তো রোজ বাবুই পরিবার আসে
রোজ সকালে বিস্তর সমাচার নিয়ে আসে সোনা রং এর রোদ!
বর্ষীয়ান বৃক্ষ, সেও তো ক্লান্ত পথিকের মাথায় অবিরল দিয়ে যায় নরম ছায়া,
মাথায় বয়ে নিয়ে তার আমৃত্যু জড়ত্বের অভিশাপ,
শ্রান্ত পথিকেরে দিবে সে আরেক ক্রোশ চলার বর।
এত মহত্বের ভার আমার এই ক্ষুদ্র জীবন হয়তো নিতেই পারেনি
তাই আমি দেবদারুর বদলে এক আধখাওয়া চায়ের পেয়ালা হয়ে পড়ে আছি অন্ধকার এলোমেলো এক ঘরের কোনে।
মা বলেন, “ও খোকা চল তোকে একটা শার্ট কিনে দেই”
আমি বলি,-“ঠিক আছে কাল বিকেলে”
আমার ‘কাল বিকেল’ আর কোনোদিন আসেনা
মাকে বলতে পারিনা আমি যে,আমার শরীর জুড়ে জড়িয়ে আছে নির্লিপ্ততার,অভাবের আর
কিছু খুচরো স্মৃতির চাদর
আমার নিজেকে বড্ড ভারী মনে হয়
তাছাড়া মা ওরা যে বলে সুখী মানুষের কাপড় থাকেনা,
কাপড় না থাকার বিনিময়ে আমি কিছু সুখ কিনতে চাই এইবেলা!
আমার জীবন আজ যেন হাইজেনবার্গ এর বাক্সবন্দী বেড়াল,
সুখ কিংবা দু:খ যেখানে এক আশ্চর্য সুপার পজিশন
এই সম্ভাবনার দোলাচলের পৃথিবীতে তাই আমি বেছে নিই এস্কেপিস্ট জীবন,
হয়তোবা নিজেরে বাচাঁনোর তাগিদেই।
হয়তোবা এবার আমি বেঁচে যাবো
আর যদি মারা যাই দুঃখের রেডিয়েশনে
তুমরা সবাই জেনো যে
আমি আমার লেখা লাইনগুলোর মতোই
বিচ্ছিন্নতাবাদী ছিলাম!